বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, , ১৯ রবিউল সানি ১৪৪৬

কুয়াশা ভেজা শীতের সকাল

কুয়াশা ভেজা শীতের সকাল

মো. গোলাম কিবরিয়া ।।বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। যদিও শীতের আমেজ শুরু হয় অগ্রায়ণের মাঝামাঝি সময়ে। শীতের সকালের রূপ অন্য সব ঋতু থেকে আলাদা। হেমন্তের আমেজ শেষ হতে না হতেই প্রকৃতিতে শীতের বুড়ী এসে হাজির। কুয়াশায় ঢেকে যায় নির্জন বন-মাঠ আর নদীর কূল। উত্তর দিগন্তে হিমালয়ের বরফচূড়া থেকে ছড়িয়ে পড়ে হিমশীতল নিঃশ্বাস। প্রকৃতি কেমন যেন জড়োসরো হয়ে যায় শীতে। বিবর্ণ হলুদ পাতারা চুপিসারে খসে পড়ে পথের ধূলোয়। শীতের দীর্ঘ রাতে কুয়াশার আবরণ গায়ে মেখে রাখে প্রকৃতি। দেখে মনে হয় যেন শুভ্রতার চাদর বিছিয়ে রেখেছে প্রকৃতি । 

তখন গাছে গাছে পাখিদের মুখরিত কলোকাকলিতে ঘুম ভাঙে মানুষের। বাংলার শীতের সকাল সত্যিই অনেক বৈচিত্র্যময়। গাছিরা খেঁজুর রস কাঁধে সারিবদ্ধভাবে হেঁটে চলে পল্লীর গাঁয়ে। পুব আকাশে কুয়াশা ঢাকা ম্লান রোদে উঠোনে পাটি বিছিয়ে ছেলেমেয়েরা কাঁচা রসে চুমুক দিয়ে শীতের আনন্দে ভাগ বসায়। মাঠভরা সরিষার  হলুদ ফুল মন কেড়ে নেয় প্রতিটি বাঙালির। প্রকৃতির সবুজ ঘাসের ডগায় ঝুলে থাকে শিশির বিন্দু। কুয়াশার ঘন জাল সরিয়ে মিষ্টি রোদের সূর্য নতুন মাত্রা যোগ করে শীতের সকালে 

 নদীর জলে আর পদ্মপুকুরে কুয়াশায় ঘেরা নিঃসীম সাদার মায়াজাল, টিনের চালে রাতভর কুয়াশার বৃষ্টি, সবজি ক্ষেতে কাকভোরে কৃষকের ছাই ছিটানো, গরু-ছাগলের পাল নিয়ে রাখাল বালকের ঘাসমাঠের দিকে ছুটে চলা, গামছা মাথায় কৃষ্ণ গায়ে চাদর মোড়ানো গাড়িয়ালের মেঠোপথে গরুর গাড়ি নিয়ে দুলকি চালে দূর পথ পাড়ি, ঠকঠক শীতে লাঠি হাতে জবুথবু লাঠিবুড়ির এলোমেলো পথচলা হয় শীতের সকালে ।