কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে জাল সনদ কেলেঙ্কারি: নিম্নমান সহকারী সেজে সাত বছর ধরে প্রকৌশলীর দায়িত্ব
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশ: ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:১১ পি এম
নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে (কুসিক) নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করে জাল সনদে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আবদুল হান্নান নামে এক কর্মচারী। ২০১৮ সাল থেকে তিনি টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেডের পদে কাজ করছেন, যদিও তিনি নন-টেকনিক্যাল ১৪তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারী। নিচু পদে যোগদান করা এক কর্মচারীর উচ্চপদে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি আলোচনার ঝড় তুলেছে।
কুসিক সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভায় উচ্চমাধ্যমিক সনদ দিয়ে নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করেন আবদুল হান্নান। ২০১৮ সাল থেকে তিনি উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানটির ওই পদ টেকনিক্যাল ও সুনির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতাসাপেক্ষ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তার নিয়োগ, যোগ্যতা ও সনদের বৈধতা নিয়ে।
অভিযোগ উঠেছে, তিনি ‘দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’ নামের বহু আগেই বন্ধ হওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে সনদ সংগ্রহ করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির তথ্যে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৬ সালে সরকারের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় এবং এখনো শিক্ষা কার্যক্রমের অনুমোদনবিহীন। বৈধ ঠিকানায় কোনো ক্যাম্পাস নেই, বরং উত্তরা ও নারায়ণগঞ্জে অবৈধ ক্যাম্পাস চালিয়েই ভুয়া ভর্তি, ক্লাস ও সনদ সরবরাহ করা হচ্ছে।
অভিযোগ সম্পর্কে মো. আবদুল হান্নান সাংবাদিককে জানান,
“২০১৬ সালে আমি চলতি দায়িত্বে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হই। শুক্রবারে ক্লাস হতো। সবসময় যেতে পারতাম না। তবে পড়ালেখা করেই সনদ পেয়েছি। প্রয়োজন হলে সনদ দেখাতে পারবো।”
সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও দাবি করেন,
“প্রশাসক স্যার যদি আমাকে নিম্নমান সহকারী পদে ফেরত দেন, আমি আগের পদে কাজ করতে রাজি। আমার মতো আরও চারজন এখানে কাজ করছেন।”
তবে তাঁর এই বক্তব্যে আরও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে—অবৈধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘পড়ালেখা করে’ কীভাবে প্রকৌশল সনদ পাওয়া গেল এবং শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কীভাবে সনদ প্রদান করল?
এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম বলেন,
“এক-দুজনের জাল সনদ থাকার কথা শুনেছি। সংখ্যাটা চারজন কিনা নিশ্চিত নই। কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেনি। তবে নাম পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, ‘দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’ ১৯৯৫ সালে অনুমোদন পেলেও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, আইন লঙ্ঘন, আর্থিক বিশৃঙ্খলা এবং শিক্ষার মান নিম্নমান হওয়ায় ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় সরকার। এখনো প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে অনুমোদন নেই।
তবুও সেই প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া সনদে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সরকারি পদে প্রকৌশলীর দায়িত্ব—সরকারি চাকরিতে নিয়োগ জালিয়াতি, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অবহেলার স্পষ্ট প্রমাণ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জনগণের করের টাকায় পরিচালিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়মের ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
- জামায়াত প্রার্থী শিশির মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা
- বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য এক ব্যক্তি দিবেন ৮০ কোটি টাকা
- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বাঁধনের পালাবদল: নতুন নেতৃত্বে মাহমুদা–সাফিন
- লালমাইতে উপজেলা শিক্ষক পরিবারের নামে শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা, অবগত নয় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস
- আইএলটিএস এ অনন্য অবদানের জন্য "Star Performer -2025" পুরস্কারে ভূষিত হলো FM Method Cumilla.
- মহড়ার সময় ট্যাঙ্ক ডুবে ভারতীয় সেনা অফিসারের মর্মান্তিক মৃত্যু
- বেগম জিয়াকে লন্ডনে নিতে ঢাকায় আসছেন ডা. জোবাইদা রহমান
- খালেদাকে বহন করা এয়ার এম্বুলেন্সে থাকছে যে সব সুবিধা
- রায়ের পর ভূমিকম্প 'আল্লাহর গজব' বল্লেন শেখ হাসিনা
- কুমিল্লায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত