মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, , ১৮ রবিউল সানি ১৪৪৬

মুরাদনগরের সাবেক এমপি ইউসুফ হারুনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা

মুরাদনগরের সাবেক এমপি ইউসুফ হারুনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা
ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টা ও মৎস্য খামার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দু’টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আরও ১৫ জন। মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) রাতে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা ও অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া নামের আইনজীবী চাঁদাবাজির মামলাটি দায়ের করেন। মুরাদনগর থানায় করা প্রথম মামলার জি. আর নং ১৫০। এর বাদী আলমগীর হোসেন মুরাদনগর সদরের নায়েব আলীর ছেলে। একই থানায় করা অপর মামলার জিআর নং ১৪৮। এর বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে। মামলার বিবরণে জানা যায় ২০২০ সালের ২০ মার্চ (শুক্রবার) রাতে মুরাদনগর উপজেলা সদরের বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদীয়া ইলেকট্রনিক্সের মালিক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন তার দোকানে অবস্থানকালে তৎকালীন এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০-৪৫ জন নেতাকর্মী ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার দোকানে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে এবং বেধরক মারধর করেন। এ সময় দোকানের ক্যাশে থাকা তিন লাখ সত্তর হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ মামলায় সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ছাড়াও মুরাদনগর সদরের হেলাল উদ্দিন, শামীম, হাসান মিয়াসহ ১৫ জনকে এজাহারভুক্ত ও ৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। চাঁদাবাজি মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া বলেন, ২০১৯সালে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি বিলে কৃষকদের থেকে ৩০০ বিঘা জমি ১২ বছরের জন্য পত্তন নিয়ে মোল্লা ফিসারিজ নামে মাছের প্রজেক্ট গড়ে তুলি। এ প্রজেক্টে মাছ চাষের জন্য দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের নিকট ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বার্ষিক হিসেবে ভাড়া দেই। প্রজেক্টে মাছ চাষের পর ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান মাছ ধরতে আসলে সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের নির্দেশে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার খামার গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে টিয়া রফিকের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক মোল্লা ফিসারিজ প্রজেক্টে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় এবং ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাদাঁ না দিলে প্রজেক্টের মাছ ধরতে দেবে না বলে হুমকি দেন। এ সময় বাধ্য হয়ে প্রজেক্টের এক বছরের ভাড়ার ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা রূপালী ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বর থেকে সাবেক এমপির উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে রফিকুল ইসলাম নিয়ে নেন। এ মামলায় এজাহারভুক্ত দু’জনসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক জানান, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের নামে থানায় ২টি মামলা হয়েছে। তদন্ত ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবশ্য মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাওয়ায় এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের সাথে বলা সম্ভব হয়নি। প্রসঙ্গত ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর ) আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।