মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, , ১৮ রবিউল সানি ১৪৪৬

ভিক্টোরিয়ার প্রাক্তন অধ্যক্ষসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

ভিক্টোরিয়ার প্রাক্তন অধ্যক্ষসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে কলেজ তহবিলের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা ও সাবেক হিসাবরক্ষক আবদুল হান্নানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান আসামি প্রফসের রতন কুমার সাহা। তার দাবি তিনি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার।
বৃহস্পতিবার (২৭জুলাই) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাফী মো.নাজমুস সাদাৎ।
মামলার অপর আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর কাজী জাহাঙ্গীর আলম। মামলায় উল্লেখ করা হয় ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর পূর্বের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু তাহেরের কাছ থেকে কলেজের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মোট স্থিতি ৭ কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা বুঝে নেন প্রফেসর রতন কুমার সাহা।
দায়িত্বে থাকাকালে প্রফেসর রতন কুমার সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তখন এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।এতে উল্লেখ করা হয় ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে কলেজের তহবিল তসরুপে অধ্যক্ষের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তৎকালীন প্রধান হিসাব রক্ষক আব্দুল হান্নান।অবশ্য বর্তমানে তিনি লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজে কর্মরত আছেন।
পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে ২০১৯ সালের ৩ মে প্রফেসর রতন কুমার সাহাকে ওএসডি করা হয়। এরপর একই বছরের ১১ জুন নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রফেসর রুহুল আমিন ভূঁইয়া।  তখন কলেজের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্থিতি ছিলো ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬ টাকা। অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর প্রফেসর রুহুল আমিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে শিক্ষকদের সমন্বয়ে ৫ সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়।
এ কমিটির প্রতিবেদনে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষা, উন্নয়ন, গবেষণাগার এবং অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিলসহ উল্লেখযোগ্য ২২টি খাতের আয়-ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায় এসবের কোনো  বিল-ভাউচার ও ব্যয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কমিটির রিকুইজিশনও ছিলো না। মালামাল গ্রহণ বা বিতরণের প্রমাণ নেই এবং বিধি মোতাবেক ক্রয়-বিক্রয় হয়নি মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ প্রফেসর রতন কুমার সাহার কর্মকালীন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাতের প্রমাণ পায় নিরীক্ষা কমিটি।
তাছাড়াও আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রমাণ মিলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও। এরপর বিষয়টি দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হলে অনুসন্ধান শুরু হয়।দীর্ঘ তদন্তে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে  কলেজের ২ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের প্রমাণ পায় সংস্থটি।এরই আলোকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করে দুদক।
মামলার প্রধান আসামি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সব সময় সচ্ছ্বতা বজায় রেখেছেন।তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।তার দাবি এটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র।