শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, , ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মী শনাক্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেবীদ্বারের ১১ শহীদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ভিক্টোরিয়ার সাবেক অধ্যক্ষ আমীর আলী চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন থানা হেফাজতে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের নতুন এমডি মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ কুমিল্লায় ডেভেলপার কোম্পানি ও জমির মালিকদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের হয়রানির অভিযোগ বেসরকারি চ্যানেলে বিটিভির সংবাদ সম্প্রচারের বাধ্যবাধকতা থাকছে না সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হলেন যিনি অপপ্রচারের প্রতিবাদে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুরে মানববন্ধন নতুন আঙ্গিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা বাংলাদেশের
  • অবশেষে নিষিদ্ধ জামায়াত-শিবির

    অবশেষে নিষিদ্ধ জামায়াত-শিবির
    ছবি- সংগৃহীত

    জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর মধ্য দিয়ে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এ দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো।সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গ–সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আইনি মতামত দিয়ে ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠায় আইন মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই- ইসলামী বা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসেবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এ ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখের প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত বা প্রাপ্ত নিবন্ধন বাতিল করিয়া দিয়াছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়কে বহাল রাখিয়াছেন; এবং যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং তার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিলো।

    এতে আরও বলা হয়েছে,  যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সব অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তপশিল-২-এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

    কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা। সে প্রেক্ষিতে গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় সভায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের বিষয়ে একমত হন ওই জোটের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হলো।

    আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কয়েক বছর আগে সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হলেও পরে সে বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি।

    এর আগে আজ সকালে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে, সেটা আমরা গত পরশু শুরু করে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে এই নিষিদ্ধের যে গেজেট প্রকাশ করা হবে, সেটারও কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা আছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে। 


    add